মিত্রম্ কৃণুধ্বম্ খলু মূলতা নো মা নো ঘোরেণ চরতাভি ধৃষ্ণু।
নি বো নু মন্যুর্বিশতামরাতিরন্যো বভূণম্ প্রসিতৌ ন্বস্তু।। ঋগ্বেদ-১০/৩৪/১৪
মিত্রম্ কৃণুধ্বম্ খলু মূলতা নো মা নো ঘোরেণ চরতাভি ধৃষ্ণু।
নি বো নু মন্যুর্বিশতামরাতিরন্যো বভূণম্ প্রসিতৌ ন্বস্তু।। ঋগ্বেদ-১০/৩৪/১৪
বিষয়-নিয়োগ বিধানের উপদেশ-
সোহকাময়ত বহু স্যাং প্রজায়েয়েতি। স তপোহতপ্যত। স তপস্তপ্ত্বা। ইদং সর্বমসৃজত। যদিদং কিন্ঞ্চ। তৎ সৃষ্ট্বা। তদেবানুপ্রাবিশৎ। ( তৈত্তি ২/৬)
অপাণিপাদো জবনো গ্রহীতা পশ্যত্যচক্ষুঃ স শূণোত্যকর্ণঃ।
ভূমিরাপোऽনলো বায়ুঃ খং মনো বুদ্ধিরেব চ।
অহঙ্কার ইতীয়ং মে ভিন্না প্রকৃতিরষ্টধা।।
গীতা-৭/৪
পদ০-ভূমিঃ।আপঃ। অনলঃ। বায়ুঃ। খম্। মনঃ। বুদ্ধিঃ। এব। চ। অহঙ্কারঃ। ইতি। ইয়ম্। মে। ভিন্না। প্রকৃতিঃ। অষ্টধা।
পদার্থ-( ভূমিঃ) পৃথিবী ( আপঃ) জল ( অনলঃ) অগ্নি ( বায়ুঃ):বায়ু ( খম্) আকাশ ( মনঃ বুদ্ধিঃ) মন বুদ্ধি ( চ) এবং অহঙ্কার ( ইতি) এই ( মে) আমার ( ভিন্না) ভিন্ন-ভিন্ন ( অষ্টধা প্রকৃতি) অট প্রকারের প্রকৃতি।।
ভাষ্য-এখানে প্রকৃতি শব্দের অর্থ "প্রক্রিয়তেऽনয়া ইতি প্রকৃতিঃ" এই ব্যুৎপত্তি উপাদান কারণের অর্থাৎ যার দ্বারা এ জগৎ নির্মিত হয় তার নাম "প্রকৃতি" এখানে সাংখ্য শাস্ত্রের মান্য প্রকৃতিকে ব্যাসজী লিখেছেন যার প্রমাণ হল এই যে- "সত্ত্বরজস্তমসাং সাম্যাবস্থা প্রকৃতিঃ প্রকৃতের্মহান্ মহতোऽহ- কারোऽহংকারাৎপঞ্চতন্মাত্রাণ্যুভয়মিন্দ্রিয়ঃ তন্মাত্রেভ্যঃস্থূ-
লভূতানি পুরুষ ইতি পঞ্চবিংশ-তির্গণঃ=সত্ত্ব,রজ,তম এই তিনটি গুণের সাম্যাবস্থাকে প্রকৃতি বলা হয়, প্রকৃতি থেকে মহান্ মহতত্ত্ব,মহতত্ত্ব থেকে অহংকার, অহংকার থেকে পঞ্চতন্মাত্র= শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস, এর থেকে পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয় এবং মনকে মিলিয়ে ছয়টি জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং এই পঞ্চতন্মাত্র থেকে পঞ্চ স্থূল ভূত হয় এবং পুরুষ,এই ( পঞ্চবিংশতি) পঁচিশটি গণ যা সাংখ্যা শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করে এখানে এই আট প্রকারের প্রকৃতি গীতায় লেখা হয়েছে এবং ভূমি আদি শব্দ দ্বারা এখানে পঞ্চতন্মাত্রের গ্রহণ রয়েছে। মায়াবাদি লোক এখানে প্রকৃতির অর্থ মায়ার গ্রহণ করেন যা এদের মতে ব্রহ্মের আশ্রয়ে থাকা অজ্ঞানের নাম এবং এই অজ্ঞান এদের মতে জ্ঞান মাত্রের দ্বারা নিবৃত্ত হয়ে যায়, এইজন্য সেগুলিকে কোন ভাব পদার্থ বলা যেতে পারে না।
যদি গীতায় প্রকৃতি শব্দ এদের মায়ার বাচক হত তবে "য় এবং বেত্তি পুরুষং প্রকৃতি চ গুণৈঃ সহ" গীতা-১৩/১৩ এখানে কেন বলা হল যে,গুণ সহিত প্রকৃতিকে যারা জানে তারা বন্ধনে আবদ্ধ হয় না। এদের মতে তো সেই মায়ারূপী অজ্ঞানের নাশ দ্বারা বন্ধন রহিত হয়, নাতো অন্য কোন জ্ঞান অথবা অনুষ্ঠান থেকে হয়। শুধুই নয় গীতা-১৩;৫ এ সাংখ্য শাস্ত্রের মান্য উক্ত পঞ্চবিংসতিগণ স্পষ্ট পাওয়া যায়, পুনরায় প্রকৃতি শব্দের অর্থ অদ্বৈতবাদি মায়া কীভাবে করেন ? অস্ত,সেই স্থলে এই কথাকে বিস্তারপূর্বক লেখা হবে যে স্থলে মায়াবাদি লোক নিজ মিথ্যা ভাষ্য দ্বারা এই পঞ্চবিংশতি- গণকে গোপণ রাখে। এখানে এতটাই প্রকৃতি ছিল যে,এই আট প্রকারের প্রকৃতি দ্বারা ব্যাসজীর অভিপ্রায় উপাদান কারণের এবং সেই উপাদান কারণকে যা জীব এবং ব্রহ্ম হতে ভিন্ন মান্য হয়,এইজন্য এর অর্থ মায়ার হতে পারে না। মায়াবাদিদের সিদ্ধান্তের অনুকূল মায়া ব্রহ্ম হতে ভিন্ন কোন বস্তু নয় কিন্তু ব্রহ্মের আশ্রয়ে রহিত এক অজ্ঞানেরই নাম মায়া,এইজন্য গীতায় প্রকৃতি শব্দের অর্থ মায়াবাদিদের মায়ার হতে পারে না।।
( ভাষ্য-শ্রী পণ্ডিত আর্যমুনি পরিব্রাজক)
ভূমিরাপোऽনলো বায়ুঃ খং মনো বুদ্ধিরেব চ।
অহঙ্কার ইতীয়ং মে ভিন্না প্রকৃতিরষ্টধা।। গীতা-৭/৪
পদ০-ভূমিঃ।আপঃ। অনলঃ। বায়ুঃ। খম্। মনঃ। বুদ্ধিঃ। এব। চ। অহঙ্কারঃ। ইতি। ইয়ম্। মে। ভিন্না। প্রকৃতিঃ। অষ্টধা।
পদার্থ-( ভূমিঃ) পৃথিবী ( আপঃ) জল ( অনলঃ) অগ্নি ( বায়ুঃ):বায়ু ( খম্) আকাশ ( মনঃ বুদ্ধিঃ) মন বুদ্ধি ( চ) এবং অহঙ্কার ( ইতি) এই ( মে) আমার ( ভিন্না) ভিন্ন-ভিন্ন ( অষ্টধা প্রকৃতি) অট প্রকারের প্রকৃতি।।
ভাষ্য-এখানে প্রকৃতি শব্দের অর্থ "প্রক্রিয়তেऽনয়া ইতি প্রকৃতিঃ" এই ব্যুৎপত্তি উপাদান কারণের অর্থাৎ যার দ্বারা এ জগৎ নির্মিত হয় তার নাম "প্রকৃতি" এখানে সাংখ্য শাস্ত্রের মান্য প্রকৃতিকে ব্যাসজী লিখেছেন যার প্রমাণ হল এই যে- "সত্ত্বরজস্তমসাং সাম্যাবস্থা প্রকৃতিঃ প্রকৃতের্মহান্ মহতোऽহ- কারোऽহংকারাৎ পঞ্চতন্মাত্রাণ্যুভয়মিন্দ্রিয়ঃ তন্মাত্রেভ্যঃস্থূ- লভূতানি পুরুষ ইতি পঞ্চবিংশ-তির্গণঃ= সত্ত্ব, রজ, তম এই তিনটি গুণের সাম্যাবস্থাকে প্রকৃতি বলা হয়, প্রকৃতি থেকে মহান্ মহতত্ত্ব,মহতত্ত্ব থেকে অহংকার, অহংকার থেকে পঞ্চতন্মাত্র=শব্দ,স্পর্শ,রূপ,রস,এর থেকে পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয় এবং মনকে মিলিয়ে ছয়টি জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং এই পঞ্চতন্মাত্র থেকে পঞ্চ স্থূল ভূত হয় এবং পুরুষ,এই ( পঞ্চ বিংশতি ) পঁচিশটি গণ যা সাংখ্যা শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করে এখানে এই আট প্রকারের প্রকৃতি গীতায় লেখা হয়েছে এবং ভূমি আদি শব্দ দ্বারা এখানে পঞ্চতন্মাত্রের গ্রহণ রয়েছে। মায়াবাদি লোক এখানে প্রকৃতির অর্থ মায়ার গ্রহণ করেন যা এদের মতে ব্রহ্মের আশ্রয়ে থাকা অজ্ঞানের নাম এবং এই অজ্ঞান এদের মতে জ্ঞান মাত্রের দ্বারা নিবৃত্ত হয়ে যায়, এইজন্য সেগুলিকে কোন ভাব পদার্থ বলা যেতে পারে না। যদি গীতায় প্রকৃতি শব্দ এদের মায়ার বাচক হত তবে "য় এবং বেত্তি পুরুষং প্রকৃতি চ গুণৈঃ সহ" গীতা-১৩/১৩ এখানে কেন বলা হল যে,গুণ সহিত প্রকৃতিকে যারা জানে তারা বন্ধনে আবদ্ধ হয় না। এদের মতে তো সেই মায়ারূপী অজ্ঞানের নাশ দ্বারা বন্ধন রহিত হয়, নাতো অন্য কোন জ্ঞান অথবা অনুষ্ঠান থেকে হয়। শুধুই নয় গীতা-১৩;৫ এ সাংখ্য শাস্ত্রের মান্য উক্ত পঞ্চবিংসতিগণ স্পষ্ট পাওয়া যায়, পুনরায় প্রকৃতি শব্দের অর্থ অদ্বৈতবাদি মায়া কীভাবে করেন? অস্ত,সেই স্থলে এই কথাকে বিস্তারপূর্বক লেখা হবে যে স্থলে মায়াবাদি লোক নিজ মিথ্যা ভাষ্য দ্বারা এই পঞ্চবিংশতি- গণকে গোপণ রাখে। এখানে এতটাই প্রকৃতি ছিল যে,এই আট প্রকারের প্রকৃতি দ্বারা ব্যাসজীর অভিপ্রায় উপাদান কারণের এবং সেই উপাদান কারণকে যা জীব এবং ব্রহ্ম হতে ভিন্ন মান্য হয়,এইজন্য এর অর্থ মায়ার হতে পারে না। মায়াবাদিদের সিদ্ধান্তের অনুকূল মায়া ব্রহ্ম হতে ভিন্ন কোন বস্তু নয় কিন্তু ব্রহ্মের আশ্রয়ে রহিত এক অজ্ঞানেরই নাম মায়া,এইজন্য গীতায় প্রকৃতি শব্দের অর্থ মায়াবাদিদের মায়ার হতে পারে না।।
( ভাষ্য-শ্রী পণ্ডিত আর্যমুনি পরিব্রাজক)
সংকরো নরকায়ৈব কুলম্নানাং কুলস্য চ।
পতন্তি পিতরো হ্যেষাং লুপ্তপিণ্ডোদকক্রিয়াঃ ।।
ব্রহ্মকে আনন্দময় সিদ্ধ করে এখন পূর্বপ্রকৃত নিরাকার ব্রহ্মের শাস্ত্রে সমন্বয় দর্শানোর জন্য অন্তরাধিকরণের আরম্ভ করা হয়েছে-
দ্বীপ গুলির রক্ষক এই সকল দেবতাদের বংশধরেরা ছিলেন ! রক্ষক শব্দ পরে বিকৃত হয়ে রাক্ষস অর্থাৎ মানুষরূপী মাংসভুক প্রাণী হয়ে যায়। সেই সময় "রাক্ষস" খারাপ শব্দ মনে করা হতো না কিন্তু হাজার বছর পর বন্য মানুষ দেখে তারাও খারাপ কাজ করতে শুরু করেন এমনকি মাংস খেতে শুরু করে পরে পরে এরা মানুষের মাংসও খাওয়া শুরু করে ফলতঃ তাদের শরীরে পরিবর্তন আসতে থাকে। ধীরে ধরে তারা সেই দ্বীপগুলিতে কয়েক হাজার বছর বসবাস করে। ততক্ষণে দেবলোকের অন্তর্গত পৃথিবীও শুকিয়ে যাওয়ায় মানুষ সেখানেও বসবাস শুরু করে এবং কঠোর পরিশ্রমীরা উন্নতি করতে থাকেন। আর্যবর্ত্ত দেশ ছিল সেইসব মানুষের আদি নিবাস, এই আর্যবর্ত্তের এক বিশাল অংশ যা আজ ভারতবর্ষ নামে পরিচিত। এই ভারতবর্ষের দক্ষিণে অসুরদের বাস ছিল।
এই অসুর বংশের এক রাজা ছিলেন বিদ্যুৎকেশ ও তাঁর রাণী ছিলেন ভোগ-বিলাসে নিমগ্না সালকটদক্টা। রাণী সালকটদক্টা কাউকে পরোয়া করতেন না, তিনি ভোগ-বলাসের জন্য সেবকদের তাঁর সদ্যোজাত পুত্র কে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন, তাঁরা সেই শিশুকে পর্বতের এক অংশে ফেলে আসেন। সেই সময় কৈলাশপতি শঙ্কর ও দেবী পার্বতী নিজেদের বিমানে করে ভ্রমণ করতে করতে বিদ্যুৎকেশের পুত্র কে দেখতে পায়। পার্বতী জী শিশুটিকে তাঁদের নিবাস-স্থান কৈলাসে নিয়ে গিয়ে লালন-পালন করতে থাকেন ও শিশুর নাম "সুকেশ" রাখেন। বিদ্যুৎকেশের পুনঃ পুত্র না হওয়ায় দুঃখী হতে থাকেন, সুকেশ ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে একসময় শঙ্কর জী সুকেশকে তাঁর আসল পরিচয় অবগত করিয়ে এক বিমান উপহার দিয়ে তাঁর পিতার কাছে পাঠিয়ে দেন। সুকেশ বলশালী ও বুদ্ধমান এবং শঙ্কর-পার্বতী জী দ্বারা পালিত ও তাঁর নিকট বিমান থাকার কারনে ক্রমশ অহঙ্কার বাড়তে থাকে। সুকেশের তিন পুত্র উৎপন্ন হয় যথা মাল্যবান, মালী ও সুমালী।
তিন ভাই অত্যন্ত বলশালী তাঁরা ঘোর তপস্যা ও শাস্ত্র অভ্যাস করার কারনে নিজেদের অতিশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি মানতে থাকে এবং এক সময় আসে যখন দেবতা, গন্ধর্ব ও মানব আদি সব এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হতে থাকে। এদের পিতা সুকেশ, শঙ্করজীর খুব প্রিয় থাকার কারনে অন্যরা তিন ভায়ের কেউ বিরোধ করতেন না। বেশ কিছু জন মিলে শঙ্করজীর কাছে সুকেশের সন্তানদের বিষয়ে অবগত করানোর জন্য কৈলাশে গেলেও শঙ্করজী তাদের সাহায্য করতে পারবেন না জানিয়ে দেন কারন সুশেক পার্বতীজীর খুব প্রিয়। শঙ্করজী বলেন তারা যেন নিজেরা পার্বতীজীর নিকট গিয়ে সব কথা জানান।
এদিকে পার্বতী জী যখন জানতে পারেন সুকেশের বিরূদ্ধে সকলে অভিযোগ নিয়ে এসেছেন তখন তিনি তাদের সাথে দেখা করতে অস্বীকার কারেন। পুনঃ শঙ্করজী সকলকে দেব লোকের রাজা ইন্দ্রের ছোট ভাই শ্রী বিষ্ণুর নিকট যেতে বলেন, দুখীজন সাগরপতি শ্রীবিষ্ণুর নিকট প্রস্থান করেন।
বিষ্ণু তাঁর পত্নী লক্ষী দেবীর সাথে মহাসাগরের কোন দ্বীপে বসবাস করতেন। সমস্ত বৃত্তান্ত শোনার পর বিষ্ণু রাক্ষসদের ওপর আক্রমণ করার ঘোষণা করেন। ষোষণা শোনার পর কোন প্রতীক্ষা না করেই রাক্ষসরা প্রথমেই বিষ্ণুলোক আক্রমণ করেন। বিষ্ণুজী রাক্ষসদের ওপর দিব্যাস্ত্র প্রয়োগ করতে থাকেন এবং বিশাল যুদ্ধ শুরু হয়। দিব্যাস্ত্রের প্রয়োগে বিশাল রাক্ষস সেনা গাজর-মুলার মতো কাটা পড়ে মারা যেতে থাকে। সমস্ত রাক্ষসদের সমূলে বিনাশের জন্য বিষ্ণুজী এবার লঙ্কাপুরী যা অজেয় মানা হতো সেখানে আক্রমণ করেন এবং সেখানে সুদর্শন চক্রের আঘাতে মাল্যবান ও মালী মারা যায়।
তাঁদের মৃত্যু দেখে যে কিছু রাক্ষস বেঁচে ছিলো তাঁরা লঙ্কাপুরী ছেড়ে চলে যায় এবং লঙ্কাপুরী জন শুন্য হয়ে যায়। জন শুন্য লঙ্কাপুরীতে দেবরাজ ইন্দ্র মহর্ষি পুলস্ত্যের পৌত্র বৈশ্রবণকে ওখানের লোকপাল নিযুক্ত করেন। বৈশ্রবণ অতি বলবান, তেজময় তথা জ্ঞানবান ছিলেন তিনি লঙ্কাপুরীতে বসবাস করতে থাকেন ও রাজ্য চালনা করতে থাকেন। এই বৈশ্রবণ পরে পরে কুবের নামে বিখ্যাত হয়ে ছিলেন।
পাতাল লোকে জঙ্গল এবং হিংস্র প্রাণীতে ভর্তি ছিলো বনবাসী সর্বথা নবীন ছিলেন। রাক্ষসরা জানতে না কি খাওয়া সঠিক হবে আর কি খাওয়া অনুচিত হবে ? সুমালী তাঁর পিতার বিমান কে বাচিয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়ে ছিলেন। সেই বিমানে করে ঘুরে খোঁজ করে নিয়ে ছিলেন কোথায় ফল-মূল যুক্ত বৃক্ষ বেশী রয়েছে, এবং পান যোগ্য জল আর কোথায় কৃষি উপযুক্ত ভূমি রয়েছে সেখানে সজাতিদের বসতি স্থাপনে সফল হয়ে ছিলেন। সব কিছু থাকা সত্ত্বেও লঙ্কাপুরীর মতো সমৃদ্ধি সেখানে ছিলো না। সুদর্শন চক্রের আগুনে তার পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। কিছু রাক্ষস তাদের স্ত্রী এবং পরিবারকে বাঁচাতে ও তাদের নিয়ে যেতে সক্ষম হয়ে ছিলেন।
সুমালী পুনঃ বিবাহ করে এক কন্যা সন্তান প্রাপ্ত হয়। ধীরে ধীরে কিছু রাক্ষস নিজ অবস্থায় দুঃখী হওয়ায় তারা লঙ্কায় গিয়ে বসবাস করতে থাকে। দেবতা ও মনুষ্যষের পক্ষে লঙ্কা বসবাস যোগ্য ছিলো না তাই কুবের তাদের পুনরায় লঙ্কাতে বসবাসের কোন বাধা দিলো না এবং লঙ্কার জন সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এইসময় রাক্ষসদের পুনরায় লঙ্কাতে যেতে দেখে সুমালীর মনে লঙ্কাতে গিয়ে থাকার ইচ্ছা হতে থাকে কিন্তু যে খানে সে একসময় রাজা ছিলো সেখানে সে সাধারন প্রজা হিসেবে থাকতে অনিচ্ছুক ছিলো। কিন্তু মনে এক বিচার আসে যে তার কন্যার বিবাহ যদি লঙ্কা অধিপতি কুবেরের সাথে দিতে পারে তবে সে নিশ্চয় সেই রাজ্যের এক অধিকারী হতে পারে। অতঃ বিমানে তাঁর কন্যাকে নিয়ে লঙ্কা পৌঁছান।
কিন্তু রাজপ্রাসাদে গিয়ে সুমালী জানতে পারেন কুবের বিবাহিত ও তার পত্নী অধিক সুন্দরী। সুমালী তার নিবাস-স্থানে ফিরে চিন্তা করেন যদি কুবেরের পিতার সাথে তার কন্যার বিবাহ দিতে পারেন তবে তার দ্বারা লঙ্কায় অধিকার জমাতে পারবেন। এই বিচার মনে আসায় তিনি বিমানে করে দেবলোকে ঋষি বিশ্রবার (বিশ্বশ্রবা) আশ্রমের সামনে পৌঁছান। অধিক তেজ্বস্বী ঋষিকে এক বৃক্ষের নীচে আসনে স্বাধ্যায় করতে দেখে সুমালী বিমানে ফিরে আসেন এবং তার কন্যা কৈকসীকে তার মনে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কৈকসী (অন্য নাম নিকষা) ঋষিকে দেখার পর তাঁর নিকট গিয়ে উপস্থিত হন এবং ঋষিপুত্র কুবেরের ন্যায় এক সন্তান পেতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ঋষি কন্যার রূপে মুগ্ধ হয়ে কিছুক্ষন চিন্তা করে তাকে পত্নীরূপে স্বীকার করে নেন।
মুনি বিশ্রবার প্রথম পত্নী রৌহিণী যিনি কুবেরের মাতা, রৌহিণী বিশ্রবার আশ্রম থেকে কিছু দূরে বাস করতেন এবং বিশ্রবা পুনঃ বিবাহের পর ব্রহ্ম ঋষি বিশ্রবার ঔরসে কৈকসীর গর্ভে চার সন্তান উৎপন্ন হয়। প্রথম সন্তান এক বলশালী বুদ্ধিমান পুত্র, যার উচিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার পর নাম রাখা হয় "দশগ্রীব"। যিনি পরে রাবণ নামে বিখ্যাত হয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় পুত্রের শরীর বিশালাকার হওয়ার কারনে কুম্ভকর্ণ নাম রাখা হয়। তৃতীয় সন্তান এক সুন্দরী কন্যা যার নাম রাখা হয় শূর্পণখা। কৈকসীর চতুর্থ সন্তান বিভীষণ যিনি অধিক সুন্দর ও মধুর স্বভাব যুক্ত এবং ঈশ্বরভক্ত ছিলেন।
বিভীষণ পিতার নিকট সহজেই শাস্ত্রের জ্ঞান প্রাপ্ত হন এবং হয়গ্রীব ও কুম্ভকর্ণ শাস্ত্র অধ্যয়নের চেয়ে খেলাধুলা বেশী পছন্দ করতেন। হয়গ্রীব যখন আঠারো বছরে উপনীত হয় তখন সুমালী তাঁর কন্যার সাথে তাঁদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ কারার জন্য হয়গ্রীব এবং কুম্ভকর্ণকে ব্রহ্মলোকে শিক্ষা দেওয়ার বিচার করতে থাকেন। হয়গ্রীব (রাবণ) এবং কুম্ভকর্ণকে ব্রহ্মলোকে শিক্ষার জন্য মনের দিক থেকে তৈরী করতে থাকেন। রাক্ষসদের সন্তান হওয়ার জন্য বাস্তবে রাবণ যে লঙ্কার রাজা এটা সুমালী দ্বারা বুঝতে পারেন এবং রাজ পদের জন্য অর্থাৎ কুবেরকে পরাস্ত করার জন্য নিজেও ব্রহ্মলোকে শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হন কিন্তু দেবতা ছাড়া অন্য কেউ ব্রহ্মলোকে শিক্ষা লাভ করতে পারতো না, সেই কারনে পিতা বিশ্রবা মুনি দ্বারা ব্রহ্মাজীকে দেওয়া পত্র নিয়ে দুই ভাই ব্রহ্মলোকে শিক্ষা লাভের জন্য পৌঁছেছিলেন। যদিও প্রথমে ব্রহ্মলোকে খুব ঠান্ডা হওয়ার কারনে কুম্ভকর্ণ আসতে আগ্রহ ছিলেন না।
পাঁচ বছর কঠোর শিক্ষা গ্রহণ করায় দুই ভাই যুদ্ধবিদ্যায় নিপুন হয়ে ওঠেন। এই সময়ে দশগ্রীব বেদাদি শাস্ত্রওে জ্ঞান অর্জন করায় ব্রহ্মাজী খুব প্রসন্ন হন, শিক্ষা লাভের পর প্রসংসা পত্র নিয়ে দুই ভাই প্রথমে পিতা মাতার দর্শন করেন পরে নানা সুমালীর কাছে চলে আসেন, সেখানে নানার নিকট লঙ্কার পূর্ণ ইতিহাস জানতে পারেন। সুমালীর পথ নির্দেশ মতো দশগ্রীব (রাবণ) পিতার নিকট গিয়ে বলেন তিনি শিক্ষা প্রাপ্তের পর এখন কোন রাজ্যের রাজা হওয়ার যোগ্য হয়েছেন এবং বড় ভাই কুবেরকে বলতে বলেন যেন রাবণকে লঙ্কাপুরীর ভার দিয়ে দেন। বিশ্রবা শুনে রাবণকে পরামর্শ দেন যেন রাবণ কুবেরের কাছে থেকে রাজকার্যে সহায়তা করেন এবং পরে নিজ যোগ্যতায় কুবেরের চেয়ে অধিক মান-প্রতিষ্ঠা পাওয়ার চেষ্টা করেন।
continue>
তথ্যসূত্রঃ পুস্তক "শ্রীরাম", লেখক-গুরদত্ত, বাল্মীকি রামায়ণ
এখন পরমাত্মার কল্যাণময় স্বরূপের বর্ণনা করছেন- য়া তে রুদ্র শিবা তনূরঘোরাৎপাপকাশিনী। তয়া নস্তনুবা শন্তময়া গিরিশন্তাভি চাকশীহি॥
মিত্রম্ কৃণুধ্বম্ খলু মূলতা নো মা নো ঘোরেণ চরতাভি ধৃষ্ণু। নি বো নু মন্যুর্বিশতামরাতিরন্যো বভূণম্ প্রসিতৌ ন্বস্তু।। ঋগ্বেদ-১০/৩৪/১৪ পদার্থ...